এক নজরে সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থা :
সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থার প্রধান কার্যালয় ও কমপ্লেক্স ভবনটি (প্লট # ৭/৫/১, বড়বাগ,মিরপুর-২, ঢাকা – ১২১৬) নিজস্ব জায়গায় (২ বিঘা) ৮ তলা ভিত্তির উপর ৩ তলা পর্যন্ত নির্মিত।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর ভলান্টারী ষ্টেরিলাইজেশন (বিএভিএস) ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সমগ্র দেশব্যাপি ৩৪টি শাখা/ক্লিনিকের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক্যাল সেবা (পুরুষ ও মহিলা স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ, আই.ইউ.ডি, ইমপ্লান্ট, ইনজেকশন) নিশ্চিত করে। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বিএভিএস সংস্থা এককভাবে টঝঅওউ এর অর্থায়নে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৫-১৯৯১ সাল পর্যন্ত ডাঃ আজিজুর রহমান বিএভিএস সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি/উপদেষ্টা (পরবর্তীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৯২ সালের ২২শে জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে সোসাল ওয়েলফেয়ার এ্যাক্ট ৯(১) ধারায় সংস্থার জাতীয় নির্বাহী কমিটি ভেঙ্গে দেয় এবং ৯ (২) ধারায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প.ক উন্নয়ন)-কে সংস্থার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । এর ফলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থলে প্রশাসক সার্বিক ক্ষমতা প্রাপ্ত হন।
১৯৯২ সালের ২২ শে জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে বিএভিএস সংস্থার ন্যাশনাল কাউন্সিল, ব্রাঞ্চ এ্যাসেমব্লিস এবং গঠনতন্ত্র বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় ।
১৯৯২ সাল থেকে অদ্যাবধি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব/যুগ্ম সচিবগণ পর্যায়ক্রমে প্রশাসকের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সংস্থার প্রশাসনিক, আর্থিক ও অন্যান্য কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে আসছেন । বর্তমানে মোঃ মীর হোসেন, যুগ্ম সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থায় নিয়মিত/সার্বক্ষণিকভাবে প্রশাসক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।
২০১০ সালের ২২ শে এপ্রিল তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় সরকার প্রশাসিত সংস্থা বিএভিএস এর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক একজন যুগ্ম সচিব/সিনিয়র উপ সচিব-কে বিএভিএস সংস্থার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশ মোতাবেক প্রশাসক মহোদয়ের বেতন ভাতাদি বিএভিএস এর সংস্থানকৃত অর্থ থেকে প্রদান করা হয় ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ/আদেশ মোতাবেক ২০০৩ হতে অদ্যাবধি ঐঘচঝচ কর্মসূচিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সিসিএসডিপি ইউনিটের অনুমোদিত ঙচ ও চওচ-তে জিওবি খাতে সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থার অনুকূলে অর্থের সংস্থান রাখা হয়। উক্ত সংস্থানকৃত অর্থ দ্বারা সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থার জনবলের বেতন ভাতাদি, অফিস ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হয়। ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সিসিএসডি ইউনিটের অনুমোদিত-চওচ ও ঙঢ়বৎধঃরড়হ চষধহ (ঙচ) এ জানুয়ারি ২০১৭ হতে জুন ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে বিএভিএস সংস্থার অনুকুলে ৮২০৩.৫৫ লক্ষ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে । স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ব্যয় মঞ্জুরী ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর হতে বরাদ্দ প্রদানক্রমে অর্থ ছাড়করণ হয় এবং সংস্থার জনবলের বেতন ভাতাদি ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হয়।
১৯৯৫-১৯৯৬ অর্থবছর থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প অডিট অধিদপ্তর (ফাপাড) ও স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষাদল কর্তৃক বছরভিত্তিক অডিট কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে ব্যয় নির্বাহ হওয়ায় কোন অডিট আপত্তি উত্থাপিত হয়নি।
বর্তমানে সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থা ঢাকাসহ ১৮টি ক্লিনিকের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা সেবা (স্থায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী), মা ও শিশু, ইপিআই, আউটডোর সেবা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিএভিএস সংস্থা ১৯৭৫ সাল থেকে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০,২২,৭১৭ জন গ্রহীতাকে স্থায়ী পদ্ধতি (পুরুষ/মহিলা) সেবা প্রদান করে এবং জাতীয়ভাবে ১৩%
অবদান রাখে । বিগত ১৯৭৫ সাল থেকে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০,২২,৭১৭ ী ৪.৪ = ৪৪,৯৯,৯৫৪ সংখ্যক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থা এককভাবে অবদান রেখেছে। উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারির মধ্যেও গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বিএভিএস সংস্থা ১,৪২,০০০ জন গ্রহীতাকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা, মা ও শিশু, ইপিআই, আউটডোর ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেছে ।
সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থার প্রত্যেক ক্লিনিকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা (স্থায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী), মা ও শিশু, ইপিআই, আউটডোর সেবা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তার, সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, নার্স, কাউন্সেলর, ষ্টোর কিপার, প্যারামেডিক, ল্যাব. টেকনিশিয়ান, ক্লিনার-কাম-গার্ডসহ মোট ১০-১৫ জনের একটি জনবল কাজ করছে এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহিতা আনয়নকারি হিসাবে প্রায় ১৫/২০ জন মাঠকর্মী কাজ করছে। বিএভিএস সংস্থাথায় প্রধান কার্যালয়সহ ১৮টি ক্লিনিকে সর্বমোট প্রায় ৫০০ জন কর্মকর্তা- কর্মচারি পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন।
ঢাকা, মিরপুর-২ এ বিএভিএস সংস্থার নিজস্ব ভবনে ৫০ বেড এর একটি মেটারনিটি হাসপাতাল ২০০০ সাল থেকে বৃহত্তর মিরপুর এলাকার মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছে। উক্ত মেটারনিটি হাসপাতালে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, শিশু বিশেষজ্ঞ, সনোলজিষ্ট, কনসালটেন্ট, সিনিয়র মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, সাইন্টিফিক অফিসার, নার্স, প্যারামেডিক, সুপারভাইজার, টেকনিশিয়ান, ল্যাব-টেকনিশিয়ান, কম্পিউটার অপারেটর, রিসেপশনিষ্ট, আয়া, ওয়ার্ড বয়, সিকিউরিটি-গার্ড, অন্যান্য কর্মচারিসহ ১২০ জন কর্মকর্তা/কর্মচারি সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে।
সরকার প্রশাসিত বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতালে আউটডোর রোগী ও গর্ভবতী চেক-আপ, নরমাল ডেলিভারী, সিজারিয়ান অপারেশন, জরায়ু অপারেশন, একটোপিক, আল্ট্রাসনোগ্রাম, প্যাথলজী, ব্লাড ট্রান্সফিউশন, এমআর, ডিএন্ডসি ইত্যাদি সেবা প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে নবজাতক ও মেডিসিন বিভাগ এর কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এপ্রিল ২০০০ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতালে সর্বমোট ৫,৮৬,৯০৩ (পাঁচ লক্ষ ছিয়াশি হাজার নয়শত তিন) জন গ্রহীতাকে মা ও শিশু এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেছে । উল্লেখ্য যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতালের অনুকূলে প্রাপ্ত নিয়মিত অনুদান ও বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতালের নিজস্ব আয় দ্বারা মেটারনিটি হাসপাতালের জনবলের বেতন-ভাতাদি ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার আলোকে বর্তমান ঞঋজ কে ২.৩০ থেকে হ্রাস করে ২.০ এর নিচে নামিয়ে আনতে হবে। সেজন্য পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান কার্যক্রম (খঅজঈ্চগ) গতিশীল করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থা পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানে জাতীয়ভাবে ১৩% অবদান রাখে এবং দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের পৃষ্টপোষকতা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতা পেলে সরকার প্রশাসিত বিএভিএস সংস্থা পরিবার পরিকল্পনা সেবা (স্থায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী), মা ও শিশু, ইপিআই, আউটডোর সেবা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে আরও অধিকতর ভূমিকা রাখবে।